শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৬:৪৫ অপরাহ্ন

দৃষ্টি দিন:
সম্মানিত পাঠক, আপনাদের স্বাগত জানাচ্ছি। প্রতিমুহূর্তের সংবাদ জানতে ভিজিট করুন -www.coxsbazarvoice.com, আর নতুন নতুন ভিডিও পেতে সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের ইউটিউব চ্যানেল Cox's Bazar Voice. ফেসবুক পেজে লাইক দিয়ে শেয়ার করুন এবং কমেন্ট করুন। ধন্যবাদ।
শিরোনাম :

জাহান্নাম থেকে মুক্তির আমল

মো. আবদুর রহমান:
মৃত্যুর মাধ্যমেই দুনিয়ার জীবনের সমাপনী আসে এবং আখেরাতের অনন্ত অসীম জীবনের সূচনা হয়। এ জীবনের দুটি অবস্থান। একটি জান্নাত, আরেকটি জাহান্নাম। তারাই হবে জান্নাতি যারা আল্লাহ ও তার রাসুলের আদেশ-নিষেধ মেনে কোরআন-হাদিসের আলোকে দুনিয়ার বুকে জীবনযাপন করেছে। আর যারা তা অমান্য করেছে তারাই জাহান্নামি। জাহান্নাম শাস্তির জায়গা ও দুঃখের কারাগার। তবে এমন কিছু আমল আছে, যা মানুষকে জাহান্নামের শাস্তি থেকে মুক্তির সন্ধান দিতে পারে।

গিবতমুক্ত জীবনযাপন : কারও অনুপস্থিতিতে তার দোষত্রুটি অন্যের কাছে প্রকাশ করাকে গিবত বলে। ইসলামি শরিয়তের দৃষ্টিতে গিবত খুবই জঘন্য ও নিন্দনীয় কাজ এবং কবিরা গেনাহ। তাই এ থেকে মুক্ত থাকা প্রত্যেক মুসলিমের কর্তব্য। গিবতমুক্ত জীবন গড়তে পারলে জাহান্নাম থেকে রক্ষা পাওয়া যাবে। নবী কারিম (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি তার (মুসলিম) ভাইয়ের অনুপস্থিতিতে তার ইজ্জত-সম্মান রক্ষায় সহায়তা করবে, আল্লাহতায়ালা কেয়ামতের দিনে তাকে জাহান্নামের আগুন থেকে রক্ষা করবেন।’ -সুনানে তিরিমিজি : ১৫২৮

দান-সদকা : ইসলাম এমন একটি জীবন-দর্শন, যার অন্যতম সৌন্দর্য হলো দান-সদকা ও মানব কল্যাণ। দান-সদকা মানুষের উত্তম বিনিয়োগ। নিয়মিত দান-সদকায় জান্নাতের নিশ্চয়তা লাভ হয়। হজরত আবু হুরায়রা (রা.) সূত্রে বর্ণিত, হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, দানশীল মানুষ আল্লাহর অতিশয় কাছে থাকেন, মানুষেরও নিকটবর্তী ও জান্নাতেরও কাছে থাকেন। জাহান্নাম তার থেকে দূরে থাকে।’ -জামে তিরমিজি : ৬৯৪

আল্লাহর ভয়ে ক্রন্দন : আল্লাহর ভয়ে দু’ফোঁটা চোখের পানি ফেলতে পারা গোটা পৃথিবীর প্রশান্তি, পরিতৃপ্তি ও মুগ্ধতার চেয়ে অনেক বেশি উত্তম। যার মূল্য হচ্ছে কেয়ামতের দিনে আল্লাহর আরশের নিচে ছায়া লাভ এবং জাহান্নাম থেকে মুক্তি। চোখের পানির কত মূল্য! এই চোখের পানি আল্লাহর কাছে অনেক প্রিয়। হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি আল্লাহর ভয়ে কাঁদে সে জাহান্নামে প্রবেশ করবে না। দুধ দোহন করার পর তা যেমন আর গাভীর ওলানে ফিরিয়ে নেওয়া অসম্ভব। আল্লাহর পথে জিহাদের ধুলোবালি এবং জাহান্নামের আগুন কখনো একত্র হবে না।’ -জামে তিরমিজি : ১৬৩৩

নামাজ আদায় : নামাজ শ্রেষ্ঠ ইবাদত। হযরত হানজালা উসাঈদি (রা.) থেকে বর্ণিত, হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেছেন, ‘যে ব্যক্তি পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ

যথাযথ পাবন্দির সঙ্গে আদায় করে, উত্তমরূপে অজু করে, সময়ের প্রতি খেয়াল রাখে, রুকু-সিজদা ঠিকমতো আদায় করে এবং এভাবে নামাজ আদায় নিজের ওপর আল্লাহর হক মনে করে, তবে জাহান্নামের আগুন তার জন্য হারাম করে দেওয়া হবে।’ -আহমাদ : ৪/২৬৭

আয়াতুল কুরসি পাঠ : পবিত্র কোরআনের শ্রেষ্ঠতম আয়াত হলো আয়াতুল কুরসি। এই আয়াতে আল্লাহর শ্রেষ্ঠ নাম ও গুণাবলিসমূহ আলোচিত হয়েছে, আয়াতটি খুবই ফজিলতপূর্ণ। আয়াতুল কুরসি পাঠ করলে মানবজাতির অনেক কল্যাণ সাধিত হয় এবং বিভিন্ন বিপদ-আপদ থেকে বাঁচা যায়। হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি প্রত্যেক ফরজ নামাজের পর আয়াতুল কুরসি পাঠ করবে, মৃত্যুর সঙ্গে সঙ্গে সে জান্নাতবাসী হবে। -সুনানে নাসায়ি : ৫/৩৩৯

রোজা পালন : রোজা একটি কল্যাণকর ইবাদত। রোজা ইহকাল ও পরকালে মানুষের জন্য কল্যাণ বয়ে আনে। হজরত উসমান (রা.) বলেন, আমি হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.)-কে বলতে শুনেছি, ‘যুদ্ধের মাঠে ঢাল যেমন তোমাদের রক্ষাকারী, রোজাও তদ্রুপ জাহান্নামের আগুন থেকে রক্ষা পাওয়ার ঢাল।’ -সুনানে নাসায়ি : ২২৩০

জাহান্নাম থেকে মুক্তির দোয়া : দোয়া আল্লাহতায়ালার কাছে চাওয়ার অপূর্ব ও অতুলনীয় মাধ্যম। দোয়া মুমিনের প্রাপ্তি ও মুক্তির হাতিয়ার। দোয়া একটি ইবাদত। হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি তিন বার আল্লাহর কাছে জান্নাত প্রার্থনা করে, জান্নাত তখন বলে, হে আল্লাহ! তাকে জান্নাতে প্রবেশ করান। আর যে ব্যক্তি তিন বার আল্লাহর কাছে জাহান্নাম থেকে মুক্তি চায়, জাহান্নাম তখন আল্লাহর কাছে বলে, হে আল্লাহ! তাকে জাহান্নাম থেকে মুক্তি দিন।’ -জামে তিরমিজি : ২৫৭২

ভয়েস/আআ

Please Share This Post in Your Social Media

© All rights reserved © 2023
Developed by : JM IT SOLUTION